• মঙ্গলবার, ৩০ মে ২০২৩, ১১:৫৬ অপরাহ্ন

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২৩ ডিসেম্বর

Reporter Name / ৬৫৭ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ৮ নভেম্বর, ২০১৮

desk:
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ আগামী ২৩ ডিসেম্বর চূড়ান্ত করে তফসিল ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা।

আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) নূরুল হুদা সংসদ নির্বাচনের এই তারিখ জানান।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী এই নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত, তা বাছাই হবে ২২ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৯ নভেম্বর। তার ২৪ দিন পর হবে ভোটগ্রহণ।

৩০০টি আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচনে এবার ভোট দেবেন ১০ কোটি ৪১ লাখ ৯০ হাজার ৪৮০ ভোটার।

এ সময় সব দলকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সকল দলকে অংশ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) নূরুল হুদা বলেন, দলগুলোর সাথে মতবিরোধ থাকলে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে হবে।

তিনি বলেন, নির্বাচনী প্রচারে সব প্রার্থী ও রাজনৈতিক দল সমান সুযোগ পাবে। সবার জন্য অভিন্ন আচরণ ও সমান সুযোগ তৈরির জন্য নির্বাচনে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিত করা হবে। এসব নিয়ে শিগগরিই পরিপত্র জারি করা হবে।

সিইসি বলেন, ভোটার, রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, প্রার্থী, প্রার্থীর সমর্থক এবং এজেন্টরা যেন বিনা কারণে হয়রানির শিকার না হন বা মামলা-মোকদ্দমার মুখে না পড়েন, তার নিশ্চয়তা দিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর কঠোর নির্দেশ থাকবে। দলমত নির্বিশেষে সংখ্যালঘু, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, ধর্ম, জাত, বর্ণ ও নারী-পুরুষভেদে সবাই ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। ভোট শেষে নিজ নিজ বাসস্থানে নিরাপদে অবস্থান করতে পারবেন।

ভাষণে সিইসি সর্বস্তরের জনগণকে নির্বাচনে নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগের আহ্বান জানান। পাশাপাশি প্রতিটি দলকে একে অন্যের প্রতি সহনশীল ও রাজনীতিসুলভ আচরণের অনুরোধ করেন তিনি।

সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি প্রতিযোগিতাপূর্ণ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনের প্রত্যাশা জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘এই প্রতিযোগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা যেন কখনও প্রতিহিংসা বা সহিংসতায় পরিণত না হয়, সে বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে অনুরোধ জানাই।’

সিইসি একাদশ জাতীয় নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের মাঠ পর্যায়ের যাবতীয় প্রস্তুতি তুলে ধরেন। ভাষণে সব নাগরিককে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে জনগণের হয়ে সব রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে অংশ নিয়ে দেশের গণতন্ত্রের ধারা এবং উন্নয়নের গতিকে সচল রাখার আহ্বানও জানান তিনি।

ভাষণে সিইসি জানান, ভোটার তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে এবং প্রায় ৪০ হাজার ভোট কেন্দ্রের বাছাই কাজ শেষ হয়েছে। নির্বাচন পরিচালনার জন্য বিভিন্ন বিভিন্ন পর্যায়ের প্রায় সাত লাখ কর্মকর্তা নিয়োগের প্রাথমিক প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। প্রত্যেক নির্বাচনি এলাকায় নির্বাহী এবং বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হবে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনী থেকে ছয় লাখের বেশি সদস্য মোতায়েন করা হবে। তাদের মধ্যে থাকবে পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব, কোস্ট গার্ড, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে উল্লেখ করে নূরুল হুদা বলেন, তাদের দক্ষতা, নিরপেক্ষতা ও একাগ্রতার ওপর বিশেষ দৃষ্টি রাখা হবে। দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার কারণে নির্বাচন ক্ষতিগ্রস্ত হলে দায়ী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে অসামরিক প্রশাসনকে যথা-প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের জন্য সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন থাকবে।

সুষ্ঠু নির্বাচন করতে নির্বাচন কমিশন কীভাবে কাজ করবে, সেটার ব্যাখ্যা করে সিইসি বলেন, পোলিং এজেন্টরা ফলাফলের তালিকা হাতে না পাওয়া পর্যন্ত কেন্দ্রে অবস্থান করবেন। নির্বাচনি কর্মকর্তারা নিরপেক্ষ দায়িত্ব পালনে অটল থাকবেন। নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটরা আইন প্রয়োগ নিশ্চিত করবেন।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ভোট কেন্দ্র, ভোটার, প্রার্থী, নির্বাচনি কর্মকর্তা ও এজেন্টদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন। গণমাধ্যমকর্মী বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ করবেন, পর্যবেক্ষকরা নির্বাচন কমিশনের নীতিমালা মেনে দায়িত্ব পালন করবেন এবং ইসি সবিচালয় সামগ্রিক পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ ও তত্তাবধানের আওতায় রাখবে।

এর আগে বেলা ১১টায় বৈঠক করে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সিইসির কক্ষে এ বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে সিইসির কক্ষে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণ রেকর্ড করা হয়। এজন্য সকাল থেকে বিটিভি, বেতারের রেকর্ডিং টিম ইসিতে অবস্থান নেয়।

সংবিধান অনুযায়ী আগামী ২৮ জানুয়ারির মধ্যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সে হিসেবে গত ৩১ অক্টোবর থেকে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষণ-গণনা শুরু হয়।

প্রসঙ্গত, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published.

আরও সংবাদ