আজ ১৯ নভেম্বর সোমবার। আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস আজ। বিশ্বব্যাপী পুরুষদের মধ্যে লিঙ্গভিত্তিক সমতা, বালক ও পুরুষদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা এবং পুরুষের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরতেই দিবসটি উদযাপিত হয়।
প্রতি বছর ১৯ নভেম্বর বিশ্বের ৭০টিরও বেশি দেশে পালন করা হয় আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস। এই দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, কানাডা, ভারত, পাকিস্তান, ক্রোয়েশিয়া, জ্যামাইকা, কিউবা, স্কটল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মাল্টা, কানাডা, ডেনমার্ক, নরওয়ে, অস্ট্রিয়া, ইউক্রেন ইত্যাদি। বাংলাদেশেও এ দিবসটি পালিত হয়েছে।
বাংলাদেশ মেন্স রাইটস ফাউন্ডেশন (বিএমআরএফ) আজ রাজধানীতে বর্ণাঢ্য র্যালি বের করে পুরুষ বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠনের দাবি জানায়। সেই সঙ্গে বৈষম্য নয়, পুরুষের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করার দাবি জানায়।
আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য হলো ‘ইতিবাচক পুরুষই অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব’। পুরুষ ও বালকদের ইতিবাচক ভূমিকার ওপরই এবার আলোকপাত করা হয়েছে।
পুরুষ দিবসের মূল আলোচ্য বিষয় পুরুষ ও ছেলেশিশুদের স্বাস্থ্য। শিশু, বালক, কিশোর বয়সে ছেলেরা নানা বৈষম্য ও নির্যাতনের শিকার হয়। পাশাপাশি ভোগে নানা স্বাস্থ্য সমস্যায়। আর তাই এসব বিষয়ে তাদের যত্ন ও মনোযোগের কথা তুলে ধরতেই এ দিবসের আয়োজন।
ষাটের দশক থেকে পুরুষ দিবস পালনের জোর দাবি ওঠে। তখন অবশ্য ৮ মার্চের নারী দিবসের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এর আগে ২৩ ফেব্রুয়ারি পালন করা হতো পুরুষ দিবস। তবে এর ইতিহাস আরো পুরোনো। ১৯২২ সাল থেকে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নে পালন করা হতো ‘রেড আর্মি অ্যান্ড নেভি ডে’। এই দিনটি পালন করা হতো মূলত পুরুষদের বীরত্ব আর ত্যাগের প্রতি সম্মান জানিয়ে।
২০০২ সালে দিবসটির নামকরণ করা হয় ‘ডিফেন্ডার অফ দ্য ফাদারল্যান্ড ডে’। রাশিয়া, ইউক্রেনসহ সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে দিবসটি পালন করা হতো। বলা যায়, নারী দিবসের অনুরূপেই পালিত হতো দিবসটি।
১৯৬৮ সালে আমেরিকান সাংবাদিক জন পি হ্যারিস নিজের লেখায় এ দিবসটি পালনের গুরুত্ব তুলে ধরেছিলেন।
নব্বই দশকের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও মাল্টায় কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ফেব্রুয়ারিতে পুরুষ দিবস পালনের জন্য বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। যদিও অনুষ্ঠানগুলো খুব একটা প্রচার পায়নি। পরবর্তী সময়ে ১৯ নভেম্বর বিশ্বব্যাপী পুরুষ দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
অনেকেই মনে করেন, নারী দিবসের বিকল্প দাঁড় করাতেই পুরুষ দিবসের আয়োজন। এ কথা সত্য নয়। বরং পুরুষের সুস্বাস্থ্য ও নির্যাতন সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করতেই এ দিবসের আয়োজন।