মামুনুর রশিদ ::
সদ্য অনুষ্ঠিত হল একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। জাতীয় নির্বাচনের উচ্ছ্বাস কাটতে না কাটতেই সমাগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। আগামী মার্চ মাসে কয়েকটি দফায় অনুষ্ঠিত হবে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ ১০ জানুয়ারি এই ঘোষনা দেন।
এই ঘোষণায় জাতীয় নির্বাচনের উচ্ছ্বাসিত হাওয়ার রেশ শেষ হতে না হতেই ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার পৌরসভা এবং ১২টি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে বইছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনী হাওয়া।
বিশেষত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেম ফেসবুকে চলছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের পোষ্টার, দলীয় ব্যানারে ছবি সম্বলিত নানাবিধ শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনের পালা।
কেউ কেউ আবার দলীয় নেতার ছবি দিয়ে প্রার্থীদের প্রচার রাখছেন। প্রচার করছেন আমার প্রিয় নেতাকে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান হিসাবে দেখতে চাই!
সাধারণ জনগণের কাছ থেকে পাওয়া এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় প্রাথমিকভাবে যাদের নাম উঠে এসেছে তারা হলেন, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ শাহাদাৎ হোসেন।
তিনি একদিকে ফরিদপুর-৪ আসনের জননন্দিত সাংসদ মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন এর মুখপাত্র আস্থাভাজন ও পরীক্ষিত নেতা। সাধারণ জনগণের ভাষ্যমতে, ভাঙ্গা উপজেলার চেয়ারম্যান হিসাবে সকল শ্রেনীর জগণের কাছে একজন প্রিয় জনপ্রতিনিধি হিসাবে খ্যাত মোঃ শাহাদাৎ হোসেন। আবাল বৃদ্ধ ও উদ্যমী তরুণ প্রজন্ম তার ভোট ব্যাঙ্ক বলে অভিমত সাধারণ জনগণের অভিমত।
সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আ’লীগ নেতা এনামুল হক অপু। তিনি ভাঙ্গা পৌরসভার বাসিন্দা। তার গ্রামের বাড়ি কাউলীবেড়ার পল্লীপাড়া। এলাকা ভিত্তিক টানে তার রাজনৈতিক গ্রহণ যোগ্যতায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনী হাওয়ায় তার নাম ভেসে বেড়াচ্ছে।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নাম উঠে এসেছে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব মাওলনা মোঃ ইসহাক মোল্লা। ভাঙ্গা পৌরসভার কাপুড়িয়া সদরদী গ্রামের ঐতিহ্যবাহী মোল্লা পরিবারের সন্তান। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি নৌকার বিজয়ের জন্য একজন নিবেদিত নেতার ভূমিকা পালনে সকলের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
এরপর বিশেষ আলোচনায় যার নাম উঠে এসেছে ভাঙ্গা পৌর আওয়ামীলীগের প্রবীণ নেতা সাধারণ সম্পাদক ও ভাঙ্গা বাজার বনিক সমিতির সভাপতি শহিদুল হক মিরু মুন্সীর বড় ছেলে এম হক বাবু। বাবু দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লার পাশে থেকে রাজনীতিতে নিজেকে বেশ সক্রিয় রেখেছেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এমহক বাবু ভাঙ্গা উপজেলা ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ উদিয়মান তরুণ নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে নৌকার বিজয় লক্ষে ব্যাপক ভূমিকা রাখায় তার নামটি উপজেলা নির্বাচনের হাওয়ায় উড়ছে।
মির্জা বদরুজ্জামান টিপু। তরুণ নেতা। নওপাড়া গ্রামের ঐতিহ্যবাহী মির্জা পরিবারের সন্তান। তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী। পেশাগত কারনে তিনি ঢাকায় অবস্থান করলেও এলাকায় তার অবাধ যাতায়াতের ফলে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা কর্মীদের মধ্যে তাকে নিয়ে অনেকেই আশার আলো দেখছেন। আ’লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বর কাজী জাফর উল্লার আস্থাভাজন হিসাবে গত জাতীয় নির্বাচনে ভাঙ্গায় বিভিন্ন গ্রাম এলাকায় যাতায়াত এর সুবাধে তাকে নিয়ে মাঠে আলোচনা চলছে।
উপজেলা আ’লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন জালাল। চুমুরদী ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান। কাজী জাফর উল্লার আস্থা ভাজন। সদ্য অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি নৌকার প্রার্থীর হয়ে মাঠে ব্যাপক কাজ করেছেন। উপজেলা নির্বাচনে তার নাম উঠে এসেছে।
ভাঙ্গা উপজেলা আ’লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ জাকির হোসেন মিয়া। এবারও তিনি আ’লীগের চেয়ারম্যান পদে সমর্থন প্রত্যাশা করছেন। আ’লীগের সমর্থন নিয়ে গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেনের কাছে তিনি পয়াজিত হন।
এছাড়া নতুন মুখ হিসাবে জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মোহাম্মাদ শাহীন শেখ, ভাঙ্গা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুজ্জামান শরীফসহ অনেকের নাম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনী হাওয়ায় ভেসে বেড়াচ্ছে।
এদিকে স্বতন্ত্র সাংসদ মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন এর আস্থাভাজন ও পরীক্ষিত নেতা বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেন এর পাশাপাশি প্রার্থীর হিসাবে আরও যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন, হামিরদী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা পরিষদ এর সদস্য মোঃ দেলোয়ার হোসেন, ট্রাভেল ব্যসায়ী মোঃ হাবিবুর রহমান, আলগী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ম ম সিদ্দিক মিয়া, পরিবহন ব্যবসায়ী মশিউর রহমান পলাশ, কালামৃধা ইউনিয়নের শাজাহান হাওলাদার।
এছাড়াও জামাতের পক্ষ থেকে মাঠে আছেন উপজেলা জামাতের আমীর বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়াম্যান মাওলানা সরোয়ার হোসেন। তবে বিএনপির কোন প্রার্থির নাম এখনও মাঠে শুনা যায় নি।