ডেস্ক প্রতিবেদক ::
গরমাগরম চা, সঙ্গে পছন্দের ‘টা’, এই সমীকরণেই জব্দ বাঙালির রসনা। তবে এ বার বোধ হয় সে সুখে দাঁড়ি টানার সময় এসেছে। প্রিয় আয়েশেও ঢুকে পড়ল ক্যানসার কাঁটা। প্রতি দিন ফুটন্ত চা পান থেকেই খাদ্যনালিতে ক্যানসারের ঝুঁকির জুজু দেখা দিল সম্প্রতি।
গরম চা ফুঁ দিয়ে খেতে কেতে কতই না চাপানউতোর সামলেছে বিশ্ববাসী। প্রেম থেকে বিরাগ, ঝগড়া থেকে বিতর্ক, রাজনীতি থেকে খেলা— সব কিছুতেই চায়ের সঙ্গত যেন আলাদা করে বিষয়টাকে উপাদেয় করে তোলে। এমন চা পানেও এ বার নিদান দেগে দিল আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটি।
‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব ক্যানসার’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রেবিজ্ঞানীদের দাবি, খাদ্যনালীতে ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা বহু গুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে ফুটন্ত চা খাওয়ার প্রবণতা। প্রায় প্রতি দিনইযাঁরা ৭৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি তাপমাত্রার চা খান, তাঁদের এই ধরনের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় প্রায় দ্বিগুণ।
৪০-৭৫ বছরের মধ্যে বয়স, এমন ৫০ হাজারেরও বেশি সংখ্যাক মানুষের উপর গবেষণা চালান বিজ্ঞানীরা। গবেষণার প্রধান ফারহাদ ইসলামির মতে, ‘‘অনেকেই গরম গরম নানা খাবার খেতে পছন্দ করেন। কিন্তু গবেষণায় প্রমাণিত, খুব গরম চা যাঁরা খান, তাঁদের এই অসুখের সম্ভাবনা বাড়ে। যে কোনও গরম বেভারেজই শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তবে গরম চায়ের ভূমিকা সবচেয়ে ক্ষতিকর। গলা থেকে পাকস্থলী এই অঞ্চলের মধ্যে দিয়ে যখন চা নামে, তখন এর গরম ক্যাফিন খাদ্যনালীর গায়ে গা বাড়াতে বাড়াতে যায়। যা থেকে আলসার ও ক্যানসারের সম্ভাবনা বাড়ে।’’
তাঁর মতে, প্রতি দিন ৬০-৭৫ সেলসিয়াস তাপমাত্রায় চা খাওয়া মানুষদের প্রায় ৯০ শতাংশই সচেতন না হলে এমন ক্যানসারের শিকার হতে পারেন। গরম কফিও এড়িয়ে চলতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে গরম চায়ের যে ক্ষতি, তার চেয়ে গরম কফির ক্ষতি তুলনামূলক ভাবে কম। হট চকোলেট বা অন্য কোনও গরম পানীয়র ক্ষেত্রেও এই অসুখের সম্ভাবনা বাড়ে কি না, তা খতিয়ে দেখছেন গবেষকরা।
ক্যানসার বিশেষজ্ঞ সুকুমার সরকারের মতে, “যে কোনও ফুটন্ত গরম খাবারই এড়িয়ে চলতে বলা হয় এই কারণেই। ওয়ার্ল্ড হেলথ অরগানাইজেশন (হু)-ও ৬৫ ডিগ্রির উপর কোনও পানীয় খেতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ইতিমধ্যেই। মুখ, গলা ও খাদ্যনালীতে হওয়া ফুয়েল টিউমারই এই ধরনের ক্যানসারকে ডেকে আনে। বিদেশের বিজ্ঞানীরা চায়ের কথা বলছেন যেমন, তেমন পরবর্তীতে কফি বা অন্যান্য বেভারেজেও এই নিষেধ আসতেই পারে।” নিউজ সুত্র আনন্দবাজার পত্রিকা