ডেস্ক প্রতিবেদক ::
নরেন্দ্র মোদীর প্রস্তাবিত সাতটি জনসভার মধ্যে একটি হতে চলেছে কলকাতায় ব্রিগেড সমাবেশ, এমনটাই খবর বিজেপি সূত্রে।
ব্রিগেডে নরেন্দ্র মোদী জনসভা করবেন আগামী ৩ এপ্রিল। মোদীর ব্রিগেড সমাবেশের পাশাপাশি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে জনসভা করবেন বিজেপির অন্যতম হাই প্রোফাইল প্রচারক অমিত শাহ এবং যোগী আদিত্যনাথও। এমনটাই খবর রাজ্য বিজেপি সূত্রে।
আগামী লোকসভা নির্বাচনে প্রতিটি দফার আগে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের দিয়ে একাধিক সভা করার পরিকল্পনা নিয়েছে বিজেপির। নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ এবং যোগী আদিত্যনাথ— এই তিন জনই এ বারের নির্বাচনে বাংলায় বিজেপির সবচেয়ে হেভিওয়েট প্রচারক।
আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু না জানানো হলেও রাজ্য বিজেপি সূত্রের খবর, মোদী এবং শাহ প্রত্যেক দফার ভোটগ্রহণের আগে একটি করে সভা করবেন রাজ্যের নানা প্রান্তে। অর্থাৎ, মোট সাত দফার হিসেব ধরলে, দু’জনেই সাতটি করে সভা করবেন বাংলায়। যোগী আদিত্যনাথ করবেন আটটি জনসভা। নরেন্দ্র মোদীর প্রস্তাবিত সাতটি জনসভার মধ্যে একটি হতে চলেছে কলকাতায় ব্রিগেড সমাবেশ, এমনটাই খবর বিজেপি সূত্রে।
মোদী এবং অমিত শাহের একাধিক সভা আয়োজনের দায়িত্ব ইতিমধ্যেই পালন করেছেন যিনি, রাজ্য বিজেপির সেই সাধারণ সম্পাদক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘৩ এপ্রিল ব্রিগেড সমাবেশের প্রস্তাব রয়েছে। দলের মধ্যে আলাপ-আলোচনা শুরু হয়েছে। কিন্তু এখনও কিছু চূড়ান্ত নয়। প্রধানমন্ত্রীর সভার দিন ক্ষণ বা জায়গা নির্ধারণের বিষয়ে চূড়ান্ত সিলমোহর প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকেই আসে। তার আগে কিছুই বলা সম্ভব নয়।’’
রাজ্য নেতৃত্ব আনুষ্ঠানিক মন্তব্য এড়িয়ে গেলেও, ৩ এপ্রিল ব্রিগেড সমাবেশ আয়োজন করতে হবে— এ কথা মাথায় রেখেই জেলায় জেলায় প্রস্তুতি শুরু করে দেওয়া হচ্ছে বলে বিজেপি সূত্রে জানানো হয়েছে।
নরেন্দ্র মোদীর ব্রিগেড সমাবেশের জন্য কয়েক মাস আগেও সক্রিয় হয়েছিল বিজেপি। বাংলার তিনটি প্রান্ত থেকে তিনটি রথ বেরবে এবং প্রস্তাবিত রথযাত্রার সমাপ্তিটা ব্রিগেড সমাবেশের মধ্যে দিয়েই হবে— এমন পরিকল্পনা বিজেপি নিয়েছিল। কিন্তু রাজ্য সরকার অনুমতি না দেওয়ায় প্রস্তাবিত রথযাত্রা বা ‘গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা’ বাতিল হয়ে যায়। সুপ্রিম কোর্ট অবশ্য জানিয়েছিল, বাংলায় বিজেপির সভা-সমাবেশে কোনও বাধা দেওয়া চলবে না।
তার পর থেকে বাংলায় বেশ কয়েকটি বড় সমাবেশ আয়োজন করেছে বিজেপি। কিন্তু ব্রিগেড সমাবেশ আয়োজনের পথে হাঁটতে পারেনি। তৃণমূল এবং বামেরা ব্রিগেডে সভা করে নিজের নিজের শক্তিপ্রদর্শন করেছে। কিন্তু ওই দুই সভায় সমাগম যে রকম হয়েছিল, বিজেপির সভায় ততটা হবে কি না, সম্মানজনক ভিড় জমবে কি না, তা নিয়েও নানা প্রশ্ন উঠতে থাকে দলের অন্দরেই। শেষ পর্যন্ত নরেন্দ্র মোদীর ব্রিগেড সমাবেশের পরিকল্পনাই স্থগিত হয়ে যায়। ৮ ফেব্রুয়ারির প্রস্তাবিত ব্রিগেড সমাবেশ খারিজ হয়ে গেলেও গত ২ ফেব্রুয়ারি উত্তর ২৪ পরগণার ঠাকুরনগরে মতুয়া সম্প্রদায়ের একটি অনুষ্ঠানে এসেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। একই দিনে দুর্গাপুরেও একটি দলীয় জনসভা করেছিলেন তিনি।
প্রস্তাবিত রথযাত্রা ভেস্তে যাওয়ার পরে বিজেপি যতটা হতোদ্যম হয়ে পড়েছিল, এখন ততটা নয়। ভোট কাছে চলে এসেছে, কেন্দ্রীয় বাহিনী রাজ্যে পৌঁছে গিয়েছে, বিভিন্ন এলাকায় রুট মার্চ শুরু হয়েছে। এলাকায় এলাকায় রাজনৈতিক কর্মসূচি বাড়াতে শুরু করেছে বিজেপি। রাজ্যের দুই-তৃতীয়াশ আসনে বিজেপির প্রার্থীতালিকাও ঘোষণা করে দিয়েছে। রাজ্য নেতৃত্ব মনে করছেন, দল এখানে ফের খানিকটা উজ্জীবিত, তাই এখন ব্রিগেড সমাবেশের পথে এগনো যেতেই পারে। নিউজ সুত্র আনন্দবাজার পত্রিকা