ডেস্ক প্রতিবেদক ::
কড়াইল বস্তির সেই শিশুটি পাচ্ছে চার লাখ টাকা। নাঈমের মানবিক কাজে খুশি হয়ে তার পাশে দাঁড়িয়েছেন এক যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী। রাজধানীর বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউতে এফ আর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয় পাইপ ধরে রাখা শিশুটি।
গতকাল বৃহস্পতিবার ভয়াবহ ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। পানি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করতে থাকেন তারা। কিন্তু পানি দেওয়ার সেই পাইপ ফুটো থাকায় কাজে ব্যঘাত ঘটে। বিষয়টি চোখে পড়ায় ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের সহযোগিতা করতে পলিথিন দিয়ে সেই ফুটো বন্ধ করার চেষ্টা করে নাঈম নামে এক শিশু। তবুও ফুটো দিয়ে পানি বের হতে থাকলে পাইপের সেই পলিথিন জড়ানো স্থানে হাত ও পা দিয়ে শক্ত করে ধরে থাকে সে, যাতে এখান দিয়ে কোনো পানি না বের হয়।
কড়াইল বস্তিতে বাবা-মা ও এক বোনের সঙ্গে বসবাস তার। স্থানীয় আরবান স্ল্যাম আনন্দ স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র সে। আগুনের খবর শুনেই বনানীতে ছুটে আসা নাঈম জানায়, তার বাবা রুহুল আমিন বনানীতে ডাব বিক্রি করেন। তাই আগুনের খবর শুনে বনানীতে ছুটে আসে নাঈম। আসার পর ভিড় ঠেলে আগুন লাগা এফআর টাওয়ারের সামনে চলে আসে।
শিশু নাঈমের এই মানবিক কাজে খুশি হয়ে তাকে উপহার স্বরূপ পাঁচ হাজার ডলার (৪ লাখ ২০ হাজার ২৯০ টাকা) প্রদানের ঘোষণা দিলেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ওমর ফারুক সামি। পাশাপাশি তার যাবতীয় পড়ালেখার দায়িত্ব গ্রহণেরও কথা জানালেন তিনি।
সিলেটের গোপালগঞ্জ উপজেলার ওমর ফারুক সামি গণমাধ্যমকে জানান, আমি নাঈমের কাজে খুশি হয়েছি। নাঈম কষ্ট করে লেখাপড়া করছে, সে পুলিশ অফিসার হতে চায়। তার ইচ্ছেপূরণ করতে আজ থেকে তার পড়ালেখার দায়িত্ব নিচ্ছি। পর্যায়ক্রমে তার উপহারের পাঁচ হাজার ডলারও প্রদান করব। এই বিষয়ে নাঈমের পরিবারের সঙ্গে এরই মধ্যে আলাপ হয়েছে বলেও জানান এই প্রবাসী।
উল্লেখ্য, গতকাল ২৩ তলাবিশিষ্ট এফ আর টাওয়ারের ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ২৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৪ জনকে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে একজন শ্রীলঙ্কান নাগরিকও রয়েছেন।