সংবাদদাতা ::
আমার আর কিছুই চাওয়ার নাই। একজন পিতার সামনে থেকে যা হারিয়ে গেছে—বলতেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তিনি। কান্নাজড়িত আবেগময় কণ্ঠে বললেন, আমার মেয়ের হত্যার আমি দ্রুত বিচার চাই। হত্যাকারীদের বিচার হলেই রাফির আত্মাশান্তি পাবে বলে নুসরাতের পিতা এ কে এম মুসার আর্তনাদ ।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে যখন হাসপাতালের মর্গে নুসরাতের মরদেহের ময়নাতদন্ত চলছিলো তখন মর্গের সামনেই ছিলেন পিতা মুসা। ওই মর্গের সামনে দাঁড়িয়েই কথা বলেছিলেন তিনি।
তিনি বলেন, আমার মেয়ে নিষ্পাপ। তাকে প্রথমে যেভাবে হেনস্তা করা হয়েছে, তার প্রতিকার চেয়েছিল আমার মেয়ে। থানায় গিয়েছিল মামলা দিতে কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে অসৌজন্যমূলক আচরণ করা হয়। পরবর্তীতে নৃশংসভাবে তাকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। আমি ভাষা হারিয়ে ফেলছি।
মেয়ের মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ হয়েছেন নুসরাতের বাবা একেএম মুসাসহ পরিবারের সবাই। নুসরাতের বাবা বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। আমি আপনাদের সবার কাছে কৃতজ্ঞ। আপনারা আমার মেয়ের জন্য অনেক করেছেন। চিকিৎসকরা আমার মেয়েকে বাঁচানোর অনেক চেষ্টা করেছেন কিন্তু বাঁচাতে পারেনি।
আমার আর কিছুই চাওয়ার নাই। আমি আমার মেয়ের হত্যার দ্রুত বিচার চাই। আমার মেয়ে হত্যার বিচারটা যেন দ্রুত হয়। যারা অপরাধী তারা যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পায়। তাহলে আমার মেয়ের আত্মা শান্তি পাবে।
নুসরাত জাহান সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী ছিলেন। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা এর আগে তাকে যৌন নিপীড়ন করে বলে অভিযোগ উঠে। এ অভিযোগে নুসরাতের মাশিরিন আক্তার বাদী হয়ে গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা করেন। এরপর অধ্যক্ষকে আটক করে পুলিশ। মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে নুসরাতের পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল।
বুধবার রাত নয়টার দিকে মারা যায় নুসরাত। এরপর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সর্বত্র চলছে নিন্দার ঝড়। সবাই নুসরাতের মৃত্যুর জন্য দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছেন। নুসরাতের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও গভীর শোক প্রকাশ করে ঘটনায় জড়িতদের ছাড় না দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।