সংবাদদাতা ::
শারীরিক ও বাকপ্রতিবন্ধী এক যুবতীকে অন্তঃস্বত্তা করার ঘটনার অভিযোগে পুলিশ সামসু শেখ নামে এক হোটেল ব্যবসায়ীকে আটক করেছে।
এ ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার মালিগ্রাম গ্রামে। গত শনিবার সামসু শেখকে তার নিজ বাড়ী থেকে আটক করে পুলিশ।
অভিযুক্ত সামসু শেখের বাড়ী উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়নের পাঁচকুল গ্রামে। সে ওই এলাকার মৃত ছাদেক শেকের পুত্র। গত ৯ এপ্রিল ভাঙ্গা থানায় মেয়েটির মা বাদী হয়ে একটি ধর্ষন মামলা দায়ের করে।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, হতদরিদ্র প্রতিবন্ধী যুবতীর মা-কে রেখে তার পিতা সূর্য্য মিয়া প্রায় ১৫ বছর পূর্বে অন্যত্র বিবাহ করেন। স্বামী পরিত্যক্ত অবস্থায় শাহিদা বেগম দীর্ঘদিন যাবৎ সহায়-সম্বলহীন হয়ে বাক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী সন্তানসহ দুই সন্তান নিয়ে অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করে আসছেন।
দুই সন্তান নিয়ে জীবিকার জন্য নিজ এলাকা ছেড়ে চান্দ্রা ইউনিয়নের মালীগ্রাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন একটি পরিত্যক্ত জায়গার ঝুপড়ী ঘরে বসবাস করে। মা কাজের জন্য বাইরে গেলে প্রতিবন্ধী যুবতীর প্রতি পাশেই হোটেল ব্যবসায়ী সামসু শেখের কুলালসার দৃষ্টি পড়ে। প্রতিবন্ধী যুবতী একা থাকার সুবাদে সামসু শেখ নানা প্রলোভন দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে।
এক পর্যায়ে সে অন্তঃসত্তা হয়ে পরে প্রতিবন্ধী যুবতী। স্থানীয় ক্লিনিকে নিয়ে তার পরীক্ষা করলে চিকিৎসক মেয়েটির ছয় মাসের অন্ত:স্বত্তা বলে জানান।
এদিকে বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে সামসু স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তিদের নিয়ে শালিশ বৈঠকে মীমাংসার চেষ্টা করে। এলাকার কিছু সচেতন গ্রামবাসী মীমাংসার বিপক্ষে অবস্থান নিতেই মীমাংসার সকল চেষ্টা ব্যর্থ হলে সামসু গা ঢাকা দেয়।
এরপর গত ৯ এপ্রিল শাহিদা বেগম বাদী হয়ে ভাঙ্গা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। অভিযোগের পর ভাঙ্গা থানার এস.আই শফিকুল ইসলাম অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত সামসু শেখকে তার নিজ বাড়ী থেকে গ্রেপ্তার করে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে ভাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ কাজী সাইদুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি মোবাইলফোনে আজ জানান, এই ঘটনায় প্রতিবন্ধী মেয়েটির মা থানায় মামলা করেন। মামলার হওয়ার পর অভিযুক্ত সামসু শেখকে পুলিশ অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে।
তিনি আরও জানান, অভিযুক্ত সামসু শেখকে পুলিশ আদালতে হাজির করার পর বিজ্ঞ আদালতের কাছে অভিযুক্ত সামসু শেখ নিজের অপরাধ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।
এ ব্যাপারে মালীগ্রাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, প্রতিবন্ধী মেয়েটির ঘটনটা তিনি লোকমুখে জেনেছেন। এই ঘটনার সাথে জড়িত অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিৎ।
স্থানীয় চান্দ্রা ইউপি চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রতিবন্ধী মেয়েটির সাথে যে অপরাধ করা হয়েছে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানাই।