ফরিদপুর সংবাদদাতা :: ফরিদপুরে আল-মদিনা নামে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে রুপা আক্তার (২০) নামে এক অন্তঃসত্ত্বাকে প্রশিক্ষণবিহীন নার্স সিজার করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এসময় নবজাতকের মাথাসহ শরীরের কয়েক জায়গায় কেটে ফেলার ঘটনায় নবজাতকের মাথায় ৯ সেলাই দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনার পর পরই ওই হাসপাতালের মালিক পলাশ মোল্যা (৪৫) ও প্রসূতি মাকে সিজার করার অভিযোগ ওঠা নার্স চায়না বেগমকে (৩৫) আটক করেছে পুলিশ।
আজ শনিবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত আল-মদিনা হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। সদ্য প্রসূতি ওই মায়ের বাড়ি রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ এলাকায়। অভিযুক্ত ওই নার্সের নাম চায়না বেগম।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সদ্য ভূমিষ্ট নবজাতকের মাথায় ৯টি সেলাই দেওয়ার পরে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় নবজাতকসহ তার মাকে উদ্ধার করে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অভিযোগ, কোনো প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ না থাকলেও এর আগেও অনেক অন্তঃসত্ত্বাকে সিজার ও ডেলিভারি করেন চায়না বেগম নামের ওই নার্স। তবে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে চায়না বেগম জানান, একটি প্রতিষ্ঠান থেকে তার ছয় মাসের প্রশিক্ষণ নেওয়া আছে। নিজের প্রশিক্ষণ নেওয়ার কথা তিনি বললেও স্থানীয় প্রশাসন ও গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে কোনো প্রশিক্ষণের সনদ দেখাতে পারেননি। এদিকে প্রশিক্ষণ থাকলেও একজন নার্স কোনো অন্তঃসত্ত্বাকে সিজার করতে পারেন কি-না এ নিয়ে ফরিদপুরে আলোচনার ঝড় বইছে।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য আমির ফয়সালের অভিযোগ, তার বোন রুপার স্বাভাবিক ডেলিভারি হতে পারতো। কিন্তু ওটি চার্জ পাওয়ার লোভে অন্তঃসত্ত্বাকে সিজার করার জন্য তড়িঘড়ি করে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যায় ওই নার্স। আমরা জানতাম ডাক্তার সিজার করবে। কিন্ত ওই নার্স যে সিজার করবে তা তাদের জানা ছিল না। কিন্ত সিজার পর দেখা যায় নবজাতকের কপালে বেশ কয়েকটি সেলাই ও অসুস্থ হয়ে আছে। বিষয়টি হাসপাতালের লোকজন লুকানোর চেষ্টা করলে তারা প্রশাসনকে জানান। পরে পুলিশ এসে হাসপাতালের মালিক ও নার্সকে আটক করে। এসময় তিনি ওই নার্স ও হাসপাতাল মালিকের বিচার দাবী করেন।
এদিকে এমন খবর পেয়ে প্রাইভেট হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. সিদ্দিকুর রহমান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুদুল আলম, জেলা স্বাচিপের সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. আব্দুল জলিল।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. সিদ্দিকুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, এ হাসপাতালে এরকম অনিয়ম হয় তা জানা ছিল না। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল বলেন, খবর পেয়ে হাসপাতালটির মালিক পলাশ ও নার্স চায়নাকে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশ কাজ করছে বলে তিনি জানান।