নিজস্ব প্রতিবেদক :: স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক কলহের সূত্র ধরে স্ত্রীর বাড়ির উঠানে বিষপান করে নিজের জীবন বিসর্জন দিলেন নাজমুল নামের এক যুবক।
ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় ঘারুয়া ইউনিয়নের বিবিরকান্দা গ্রামে। নাজমুল একই গ্রামের প্রবাসী ইলিয়াছ মাতুব্বরের ছেলে।
আজ বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নাজমুলের মৃত্যু হয়েছে বলে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন তাঁর স্বজনেরা।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে চুমুরদী ইউনিয়নের পূর্ব সদরদী গ্রামের শ্বশুরবাড়িতে বিষপানের ঘটনা ঘটে। জানা গেছে সোমবার নাজমুলকে তালাক দেন তাঁর স্ত্রী মনিকা। মনিকা চুমুরদী ইউনিয়নের পূর্ব সদরদী গ্রামের হাসমত সিকদারের মেয়ে।
হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত চার বছর আগে কনিকার সঙ্গে বিয়ে হয় নাজমুলের। বিয়ের পর নাজমুলের সাথে পারিবারিক বিবিধ ঘটনার রেশ ধরে স্ত্রী মনিকাসহ উভয় পরিবারের লোকজনের চরম মনোমালিন্যের তিক্ততা ফুটে উঠে।
অবশেষে গত সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) নাজমুলকে তালাক দেন মনিকা। এ ঘটনার পর মঙ্গলবার শ্বশুরবাড়ির উঠানে বিষপান করে নাজমুল। স্থানীয়রা তাঁকে দ্রুত উদ্ধার করে ভাঙ্গা উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করার পর রাতে তাঁর অবস্থার অবনতি হওয়ায় চিকিৎসকরা তাঁকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে বুধবার দুপুরে নাজমুল মারা যায়।
স্ত্রী মনিকা সাংবাদিকদের বলেন, বিয়ের পর থেকেই তার (স্বামী) বাইরের প্রতি বিশেষ টান ছিল। আমি ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন অনেক বোঝাতে চেষ্টা করি কোন ফল না হওয়ায় বাধ্য হয়ে গত সোমবার আমার স্বামীকে তালাক দিতেই মঙ্গলবার দুপুরে আমাদের বাড়ির উঠানে এসে বিষ পান করে।
নাজমুলের বাবা ইলিয়াস মাতুব্বর বলেন, আমার ছেলে মারা গেছে। আমি আর কি বলতে পারি বলতেই তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
চুমুরদী ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, নাজমুল তাঁর শ্বশুরবাড়িতে বিষ করেছে বলে গ্রাম পুলিশের মারফরত জানতে পেরেছি। ঘটনাটি অত্যান্ত দুঃখজনক।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রানেশ চন্দ্র বলেন, মঙ্গলবার নাজমূল নামে এক ব্যক্তিকে তাঁর স্বজনেরা দুপুরে হাসপাতালে নিয়ে আসে। প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হলেও তাঁর শরীরে বিষ ছড়িয়ে পড়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল বলেন, লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।’
ভাঙ্গা থানার ওসি জিয়ারুল ইসলাম বলেন, এ ব্যাপারে আমরা কোনো প্রকার অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।