• মঙ্গলবার, ৩০ মে ২০২৩, ১১:১০ অপরাহ্ন

ভাঙ্গায় স্বামীর নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রবাসী গৃবধুর আত্মহত্যা

Reporter Name / ১১ Time View
Update : রবিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক ::  প্রথম স্বামীর ঘরে সংসারে সুখের মুখ না দেখতে পেয়ে দ্বিতীয় স্বামীর সাথে একবুক স্বপ্ন নিয়ে ঘর বেঁধেছিল প্রবাসী নারী বিউটি আক্তার। কিন্ত বিধিবাম! কে জানতো এ ঘরও তার জন্য নয়? দ্বিতীয় স্বামী ভাল বেসেছিল তার প্রবাসী আয়ের অর্থের লোভেপড়ে। প্রবাস থেকে শত কষ্টের ডালি মাথায় অর্জিত পুরো অর্থআত্মসাৎ করায় স্বামী উপর অভিমান করে ক্ষোভ প্রকাশ করতে গলায় রশি ঝুলিয়ে নিজের জীবন বিসর্জন দিলেন ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার কাউলিবেড়া ইউনিয়নের মোটরা গ্রামের মেয়ে প্রবাসী নারী বিউটি আক্তার (৪০)।

চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার ( ৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যায়। বিউটি আক্তার মোটরা গ্রামের মোসলেম মাতুব্বরের মেয়ে। বাড়ির পাশের সানরাইজ কিন্ডারগার্টেন স্কুলের একটি কক্ষের আড়ার সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। খব্র পেয়ে ভাঙ্গা থানা পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করেছে থানায় নিয়ে গেছে।

ছেলে জাহিদ শেখের অভিযোগ তার মায়ের বিদেশ থেকে পাঠানো টাকা না পেয়ে তার উপর অভিমান করে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে বলতেই মায়ের লাশের উপর কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। এসময় গোটা এলাকায় একটি শোঁকের ছায়া নেমে আসে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিউটি আক্তারের প্রথমে সূর্যনগর এলাকার শাহজাহান নামের এক ছেলের সাথে বিয়ে হয়েছিল। সেই সংসারে দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। প্রায় ছয় বছর আগে স্বামীর সঙ্গে ডিভোর্স হয়। তিন সন্তানই তার কাছেই থাকত। সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে সংসারের সবচ্ছলতার কথা ভেবে বিউটি সৌদি আরবে ঝিয়ের কাজ করতে যায়। দুই বছ্র সৌদি আরব কাঁটিয়ে ছুটিতে এসে পার্শ্ববর্তী সালথা উপজেলার লুৎফর নামের এক যুবকে বিয়ে করে। বিবাহের কিছু দিন পরে বিউটি পুনরায় বিদেশ চলে যায়। বিদেশ গিয়ে তার অর্জিত টাকা দ্বিতীয় স্বামী লুৎফরের কাছে পাঠাতে থাকেন। ফের আবার দেশে ফিরে আসে বিউটি। বাড়িতে এসে স্বামীর নিকট টাকার হিসেব দাবী করে। কিন্ত সুচতুর স্বামী লুৎফর টাকা দিতে বিবিধ বাহানা শুরু করে বিউটির সাথে। শুধু কি তাই? টাকা চাইলেই তাকে মারধর করে স্বামী। এভাবেই দিনের পর দিন বিউটির ভাগ্যে নেমে আসে শারীরিক ও অমানুষিক নির্যাতন। একটি সময় রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে প্রবাসী নারী বিউটি।

প্রবাসী গৃহবধুর ছেলে জাহিদ জানায়, আমার মা (তার স্বামী লুৎফরের নিকট) টাকা চাইলেই প্রায় সময় মারধর করত। শুধু মারধরই করত না টাকা চাইলে তাকে মেরে ফেলারও হুমকি দিইয়ে আসছিল। কিছু দিন আগেও মারধর করায় আমি ফরিদপুরে হাসপাতালে মাকে চিকিৎসা করে সুস্থতার পরে বাড়িতে এনেছি। তার মুখে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আমার মা লুৎফরের সীমাহীন অত্যাচার সইতে না পেরে আমার নানা বাড়ি চলে এসেছে। আমার মায়ের স্বামী লুৎফরের কারনে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে বলে অভিযোগ করে তার বিচার দাবি করেন প্রবাসী গৃহবধুর ছেলে জাহিদ।

ভাঙ্গা থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ জিয়ারুল ইসলাম বলেন, গলায় রশি ঝুলিয়ে একজন মহিলার আত্মহত্যার খবর শুনে পুলিশ পাঠানোর পর আমি নিজেও সেখানে উপস্থিত হই। ঘটনাটি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published.

আরও সংবাদ